শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪
২ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমাদের দুঃখ-কষ্টের কথা কেউ শোনে না

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: মঙ্গলবার, জুলাই ১৬, ২০২৪

আমাদের দুঃখ-কষ্টের কথা কেউ শোনে না
এম.এম হায়দার আলীঃ
দেশ স্বাধীনের এত বছরেও অবহেলিত একটি ইউনিয়নের নাম, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা। যা ৩৩ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ ইউনিয়নে ৭ হাজার ৪শত ৯১টি পরিবারের প্রায় ৪৮ হাজার মানুষের বসবাস। শ্যামনাগর উপজেলার সবচেয়ে জন বহুল ইউনিয়ন হওয়া সত্ত্বেও গাবুরার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক।
জানা গেছে, এই ইউনিয়নে কোথাও নেই পাকা সড়ক। দু’একটি ইটের সড়ক ছিল। সেগুলোরও ইট উঠে বড় বড় গর্তে পরিণত হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সেতু-কালভার্ট নেই বললেও চলে। ইউনিয়নের ১৫ গ্রামে যাতায়াতের সব রাস্তা মাটির।
ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা। রাস্তা হিসেবে ব্যবহৃত জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ দিয়ে চলতে গেলে গা শিউরে ওঠে। তাও আবার বেশির ভাগ অংশ ভেঙে নদীতে চলে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, এখন বৃষ্টির সময় কাদামাটি দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। জুতা পরে রাস্তায় চলা যায় না। ছেলে-মেয়েরা স্কুল কলেজে যেতে পারে না। বিশেষ করে বর্ষাকালে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে নিতে অনেক কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।  উন্নয়নের কথা শুনলেও চোখে দেখি না। আমাদের রাস্তাঘাটের কোনো উন্নয়ন হয়নি।.৯ নম্বর সোরা গ্রামের বাসিন্দা মোহম্মদ আলী বলেন, আমাদের ইউনিয়নই মনে হয় দেশের একমাত্র ইউনিয়ন যেখানে কোনো পিচের রাস্তা নেই। বেড়িবাঁধই আমাদের প্রধান রাস্তা,তাও জরাজীর্ণ। সারাদিন বৃষ্টি হচ্ছে রাস্তায় হাটার মতো অবস্থা নেই। একই ইউনিয়নের ডুমুরিয়ার গোলাম রব্বানী বলেন,আমাদের দুঃখ-কষ্ট, দুর্ভোগের কথা কেউ শুনে না। আমাদের ভোগান্তির কথা বলে বোঝানো যাবে না, নিজ চোখে দেখতে হবে। আমরা ঠিক মতো হাট-বাজারে যেতে পারি না। আমাদের ছেলে-মেয়েরা কষ্ট করে স্কুল-কলেজে যায়। এভাবে কত কাল কষ্ট করতে হবে কে জানে। ইউনিয়নের চাঁদনিমুখা গ্রামের আব্দুল আজিজ বলেন, ২০০৯ সালে আইলার আগে কিছু পাকা রাস্তা ইটের থাকলেও আইলায় ধসে গেছে। তারপর থেকেই ভেঙে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা। একটি এলাকার উন্নয়নের প্রধান শর্ত- ওই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন। আমরা ইউনিয়ন বাসী সেটি থেকে বঞ্চিত।
গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান জিএম মাসুদুল আলম বলেন, ৪৮ হাজার মানুষের বৃষ্টির মধ্যে কাদামাটি দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এলাকায় রাস্তাঘাট নেই। তবে একসময় ছিল। হরিশখালি-পার্শ্বেমারী, চাঁদনিমুখা-চৌদ্দরশিতে ইটের রাস্তা ছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা, বুলবুল ও আম্পানে গোটা ইউনিয়ন ডুবে যাওয়ায় রাস্তাগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। এখন চলাচলের রাস্তা নেই। ইউনিয়নের কোথাও পাকা সড়ক নেই। রাস্তাঘাট ভালো রাখতে হলে আগে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে। সর্বোপরি,অবহেলিত এই ইউনিয়ন বাসীর চলাচলের দুর্ভোগ লাঘবে বর্তমান ডিজিটাল বাংলার রূপকার জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার ভুক্তভোগীরা সহ সচেতন মহল।
0 Comments